মো: রবিন ইসলামঃ সাবেক ওই শিক্ষক নিজেই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন এবং পরে উপস্থিত লোকজনের হাতে মারধরের শিকার হয়ে তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
তবে তার অবস্থার ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।
“তিনি আমাদের এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। এটুকু বলতে পারি যে তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন কিছু নয়,” নিউজ 24 আওয়ারকে বলছিলেন তিনি।
ওদিকে পুলিশ জানিয়েছে ইতোমধ্যেই নিহত নারীর পরিবারের দায়ের করা মামলায় আহত চালককে আসামী করায় মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং তিনি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মামলায় ঘটনা সম্পর্কে কী বলা হয়েছে এবং পরবর্তীতে কী হবে
গাড়ীর চাকায় পিষ্ট হওয়া নারী রুবিনা আক্তার রুবীর ভাই জাকির হোসেন মিলন থানায় যে অভিযোগ করেছেন সেখানে বলা হয়েছে যে গত শুক্রবার তার বোন নিজের তেজকুনি পাড়ার বাসা থেকে তার ননদের স্বামীর মটরসাইকেলযোগে মিস্টার মিলনের হাজারীবাগের বাসায় যাচ্ছিলেন।
বেলা তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিস্থলের সামনের সড়কে পিছন দিক থেকে এসে একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেট কার দ্রুত গতিতে এসে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়।মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার বলছেন দেশে এখন যে আইন আছে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সেটিকে তারা একটি অস্পষ্ট আইন বলে মনে করেন।
“আমাদের আইনটিই অস্পষ্ট। কারণ এখানে বিস্তারিত কিছু বলা নেই। অনেকটা মাদার ল’র মতো। তাই আইনটা প্রয়োগ করাও অসম্ভব। একজনকে ধাক্কা মেরে ফেলে তাকে টেনে নিয়ে যাওয়া বা এ ধরণের সম্ভাব্য আরও কিছু হতে পারে যেগুলো নিয়ে এখানে কোনো কিছু নেই,” বলছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত বিশ্বের অনেক দেশেই যানবাহন দুর্ঘটনা একটি অপরাধ এবং একই সাথে এভাবে কাউকে টেনে হিঁচড়ে নিলে সেজন্য আরও শাস্তির বিধান সম্বলিত আইন আছে।
“কিন্তু বাংলাদেশে একটা দুর্ঘটনার পর কিভাবে সেটি নিয়ে কাজ হবে, কারা তদন্ত করবে, কী কী কাজ করবে, কারা ব্যবস্থা নিবে-এগুলোই তো আইনে কিছু নেই। যে আইনে দুর্ঘটনা পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে কিছু বলা নেই সে আইন কি কাজে লাগবে,” বলছিলেন মিস্টার তালুকদার যার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ক আইনগুলো নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে।
এতে মোটরসাইকেল চালক এবং ওই নারী দুজনেই ছিটকে পড়েন। কিন্তু ওই নারী চাকার নীচের পড়লেও গাড়ী চালক ওই অবস্থাতেই তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকে।
এ অবস্থায় মোটরসাইকেল চালকসহ উপস্থিত লোকজন তাকে ধাওয়া দিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে গিয়ে আটক করতে সক্ষম হয়। এরপর উপস্থিত লোকজন চালককে মারধর শুরু করলে কাছে থাকা পুলিশ এসে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।
রুবিনা আক্তার ও গাড়ী চালককে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা রুবিনা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপরই মূলত জানা যায় ওই গাড়ী চালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের একজন সাবেক শিক্ষক। বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগের কারণে ২০১৮ সালে তাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী।
এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
তবে নিহতদের ভাইয়ের মামলায় ইতোমধ্যেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়েছে এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম শুরু হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Leave a Reply