রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হলের কক্ষে ডেকে নিয়ে এক কর্মচারীকে মারধর করে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৬৪নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের একজন কর্মচারী। অপরদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি সকালে বিভাগের কাজকর্ম করছিলাম এ সময় বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলামের পরিচয় দিয়ে অসুস্থতার কথা বলে ফরম ফিলাপ করার কাগজপত্র নেওয়ার জন্য আমাকে সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৬৪নং কক্ষে ডাকা হয়। আমি সেখানে গেলে রুমের দরজা জানালা বন্ধ করে মোমিন এবং মাজহারুল দুজন মিলে আমাকে মারধর করে এবং আমার কাছে থাকা ৩০ হাজারের মতো টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোমিন বলেন, রফিকুল ভাই আমার বিভাগের কর্মচারী। তিনি সন্তানের অসুস্থতার কথা বলে আমার কাছ থেকে দুই-তিন দিনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সেটা দিচ্ছিলেন না। টাকার জন্য আমি তাকে ডাকি এবং একসঙ্গে চা খাওয়ার পর টাকাটা চাইলে তিনি বলেন টাকা তো আমি আরেকজনের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, পরে আমি বললাম আমি তো টাকা পাইনি। উনি বললেন ভাই তাহলে আমি পরে আপনাকে টাকা দিয়ে দেব একটু সময় দেন। তারপর আমি উনাকে যেতে বললে উনি চলে যান। অন্য শিক্ষার্থীর পরিচয়ে ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামকে ডাকা হয়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে আরেক ছাত্রলীগ নেতা মাজহারুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম এবং পার্শ্ববর্তী জোহা হলের সাধারণ সম্পাদক মোমিন হলের ৩৬৪ নম্বর কক্ষে সংস্কৃত বিভাগের কর্মচারী রফিকুল ইসলামকে নিয়ে এসে মারধর করলে একপর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আপাতত ৩৬৪ নম্বর কক্ষটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় আমাদের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের মিটিংয়ের মাধ্যমে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Leave a Reply