বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলা ভূমির চাদরে আবৃত্ত আমার প্রিয় বাংলাদেশ। এই উর্বর সবুজের লীলা ভূমির বুুকেই স্রষ্টার অপূর্ব সৃষ্টি দেওয়া সাজানো গোছানো রয়েছে বিশ্বের সুদীর্ঘ ও বৃহত্তম নদ-নদী সাগর বিধৌত এক বৈচিত্র্যময় অপার সম্ভাবনা উপকূলীয় অঞ্চল। যেখানে লুকিয়ে রয়েছে এক বিশাল অর্থনীতির ভান্ডার। শুধু সৎ সাহস, সৎ উদ্দ্যোগ এবং দক্ষ মনোবল সমৃদ্ধ নেতৃত্বই খুলে দিতে পারে বিশাল আমাদের সেই লুকিয়ে থাকা অর্থনীতির স্বর্ণ খচিত দ্বার।
এ দেশের মাটিতেই আমার জন্ম আবার এই দেশের মাটিতেই একদিন হারিয়ে যাব। এই সোনালী উর্বর ও দৃষ্টিনন্দন দেশ থেকে একদিন আমি হারিয়ে গেলেও চিরদিন থেকে যাবে আমার কর্মময় ইতিহাস। আমার হৃদয়ে ভাবনার সর্ব জায়গা জুড়েই রয়েছে প্রিয় বাংলাদেশ এবং প্রিয় ১৭ কোটি মানুষ। এই প্রিয় দেশটি সবার উপরে থাকুক এই ভাবনা চিন্তায় জীবনকে আমি তীলে তীলে গড়ে আসছি। তাই প্রিয় বাংলাদেশের সমৃদ্বির সংবাদ পেলে যেমন গভীর ঘুম থেকে জেগে উঠি অন্ধকারে আলো দেখি, তেমনি দুঃসংবাদের খবরে আবার আলোতে যেন অন্ধকার দেখি। তাই আর বিদেশ নয়, এ দেশের মাটি কচলালেই আমরা স্বর্ণ পেতে পারি। এর জন্য দরকার একটি সমন্বিত সাহসী উদ্যোগ। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ আজ একটি হিরের টুকরো। সমগ্র বিশ্বের প্রভাবশালী নেতৃত্বের সুনজর এখন আমার প্রিয় বাংলাদেশের উপর।
কারণ বিশ্বের মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাংলাদেশ একটি ট্রানজিট পয়েন্ট। বাহারী সৌন্দর্য্যরে রুপ লাবণ্য দিয়েই যে, বাংলাদেশ বিশ্বকে আকৃষ্ট করেছে তা নয়, বিশ্ব মুক্ত বাজার অর্থনীতির চেক ইন চেক আউট এর সদর দরজা হিসাবেও আমাদের প্রিয় ভুখন্ড মূখ্য ভূমিকা পালন করছে। আমরা না বুঝলেও বিশ্ব নেতৃত্ব ঠিকই আমাদের উন্নতির সমৃদ্বির ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ সচেতন রয়েছে। প্রিয় সোনার টুকরো বাংলাদেশটি শুধু এশিয়ার অর্থনীতিতে নয়, বিশ্ব অর্থনীতিতেও একটি ট্রানজিট রোলারের মত শক্ত অবস্থানে রয়েছে। আমাদের আর অবচেতনভাবে ঘুমিয়ে থেকে সময় নষ্ট করার সুজোগ নেই। বিশ্ব মানচিত্রের বুকে আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশ হবে আমাদের জীবন মরণে কাঙ্খিত ঠিকানা।
এই প্রিয় দেশটি নিয়ে আমার মত যারা ভাবেন, সকলের তরে আমার প্রশ্ন, আপনারাই বলুন বিশ্বের কোথাও বাংলাদেশের মত এতো সুদীর্ঘ বৃহত্তম প্রাকৃতিক সৌন্দের্য্য মন্ডিত নির্মল সবুজশ্যামল সমুদ্র সৈকত আরো ২/১ টি রয়েছে আমি বলবো না? তাহলে দক্ষ ও সাহসী নেতৃত্বই পারে ৭২০ বর্গকিলোমিটারের এই মহাসমুদ্র সৈকতে সোনা ফলাতে। বাঙ্গালি জাতি একটি স্বপ্ন বিভোর জাতি। যে জাতি স্বপ্ন নিয়েই বেড়ে উঠে। এই জাতিকে দূর বহু দূর নিয়ে গেছে। তাই এই জাতির সামনে এখন বড় স্বপ্ন একটি স্মার্ট ও অপরুপ সৌন্দর্য্যে খচিত পর্যটন শিল্পের আত্মবিকাশ। এর জন্য আমার সরকারের নিকট পরামর্শ হচ্ছে-৭২০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে মহাসমুদ্র সৈকতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে মেরিন ড্রাইভ রোড নির্মাণ করুন। আর এই মেগা প্রকল্পটির দায় দায়িত্ব এবং তদারকি ছেড়ে দিতে হবে আমাদের সুদক্ষও কঠোর পরিশ্রমী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর হাতে।
পর্যটন শিল্পে আমরা যদি এই দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ রোড নির্মাণ করতে পারি আমরা তাহলে বিশ্বকে আরও চমক লাগিয়ে দিতে পারি। এজন্য কাজে লাগাতে হবে দেশি বিদেশী সুদক্ষ প্রকৌশলী এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে আর্কিটেকদের। যারা চমকপ্রদ উদাহরণ রয়েছে বিশ্বের মিডেল ইস্ট কান্ট্রিগুলো। এই
মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ হলে বাংলাদেশের শৈল্পিক অবকাঠামোগত খাত আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের ইতিহাসে পদ্মা সেতুর মত তখন মেরিন ড্রাইভ রোড হবে আরেকটি স্বরণীয় ইতিহাস। যা আগামীর ডিজিটালাইজড বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সিংহের মত গর্জে উঠবে। মেরিন ড্রাইভের উভয় পাশে দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য গড়ে তুলতে হবে। মেগা বাজেট ও মেগা পরিকল্পনার সমন্বয়ে গড়ে তুলতে হবে জোনভিত্তিক শিল্পকারখানা, অত্যাধুনিক জাহাজ নির্মাণ শিল্প, ইকো-পার্ক. অর্থনৈতিক শিল্পাঞ্চল, আন্তর্জাতিক মানের মেগা মেগা শপিং মল, বিমানবন্দর, ফাইভ স্টার ও সেভেন স্টার হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট। ইতিমধ্যে গোল্ড স্যান্ডস গ্রুপ পর্যটন এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের ফাইভ স্টার হোটেল এন্ড রিসোর্ট নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। এই
মেগাপরিকল্পনায় যদি আমরা বিশাল সম্ভাবনার সমুদ্র সৈকতকে সাজাতে পারি তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ হবে আরেকটি রোল মডেল। আমাদের দেশ নদী মাতৃক দেশ। নদী ও সাগরের পাড়কে মেরিন ড্রাইভ রোডের মাধ্যমে সংরক্ষন করে সর্বপ্রথম এটিকে প্রকৃতি নির্ভর করতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চল যদি প্রকৃতি নির্ভর হয় তাহলে আমাদের দেশ ভয়ংকর সাইক্লোন ও টর্নেডোর মহামারির ছোবল থেকে রক্ষা পাবে। ১৭ কোটি মানুষের ঘনবসতি জাতি হিসাবে আমাদের চিন্তা চেতনা এবং কর্মকান্ডকে আরো সুদৃঢ়ভাবে কাজে লাগাতে হবে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ৭২০ বর্গকিলোমিটারের উপকূলীয় অঞ্চলে আমাদেরকে বিশ^ সেরা পর্যটন গড়ার মহাস¦প্ন দেখতে হবে। আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের চেয়ে উপকূলীয় অঞ্চলকে আরো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পর্যটন শিল্পকে লোভনীয় করে আমরা গড়ে তুলতে পারি। যার আয় দিয়ে আমাদের পুরো অর্থনীতির ভীত মজবুত ও টেকসই করতে পারি। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা যদি সর্বাধুনিক মেরিন ড্রাইভ রোড করে আমাদের সবুজায়নে আবৃত উপকূলীয় অঞ্চলকে সাজাতে পারি তাহলে বিশ্ববিখ্যাত সুইজারল্যান্ডের নামী দামী পর্যটনকেও আমরা হার মানাতে পারব ইনশাল্লাহ। আমাদের পাশের দেশ মালদ্বীপরে চেয়ে আমার প্রিয় বাংলাদেশ অনেক বেশি শক্তিশালী এবং শক্তিধর। তাদের রাষ্ট্র যদি সাগরের মাঝখানে পর্যটনের দেশ বানাতে পারে তাহলে আমরা শাক্তিশালী রাষ্ট্র হিসাবে কেন এতো পিছিয়ে রয়েছি? আমি সরকারকে বিনীত অনুরোধ করবো টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত ৭২০ বর্গকিলোমিটার সাগর পাড়কে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ব পর্যটন করতে আমাদের সুশৃঙ্খল দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ীদের তত্বাবধানে ছেড়ে দিন আমরা যদি সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্তে আসতে পারি তাহলে মিডেলিস্ট কান্ট্রির বিনিয়োগ নিয়ে ঐতিহাসিক মেরিন ড্রাইভ দ্রুততম সময়ে নির্মাণ করতে পারবো।
মেরিন ড্রাইভ রোড নির্মাণের পাশাপাশি প্রযুক্তি সমৃদ্ধ স্লুইস গেটও নির্মাণ করতে হবে। তাহলে সাগরের উত্তাল জোয়ারের পানি পর্যটন এলাকায় প্রবেশ করলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে তা নিস্কশিত হয়ে পর্যটনের পরিবেশকে নির্মল ও সবুজায়ন করে তুলবে। বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যায়, পর্যটন দিয়ে আজকে অনেক ছোট বড় দেশ অর্থনীতিতে অনেক শক্ত অবস্থানে পৌছে গেছে। যার আরেকটি একটা উদাহরণ হলো ছোট্ট একটি দ্বীপের দেশ তাইওয়ান। তাদের পুরো দ্বীপ জুড়েই রয়েছে অত্যাধুনিক শিল্পকারখানা সমৃদ্ধ নজর কাড়া পর্যটন। আমার দৃষ্টিতে তাইওয়ান ছোট্ট দ্বীপের দেশ হয়েও তারা সুদক্ষ নির্মাণ শৈলী দ্বারা নির্মিত পর্যটন দিয়ে আজকে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় জায়গা করে নিয়েছে। তাই আসুন জেগে উঠি, জাতিকে জাগিয়ে উঠাই। গোল্ডস্যান্ডস গ্রুপের কর্পোরেট হেড অফিস (৪৭ নাসা হাইটস, গুলশান-১, ঢাকা, ফোন- ০১৮৭৭৭১৫৩৩৩)৭২০ বর্গকিলোমিটারের বাংলাদেশের টেকসই পর্যটন শিল্প, চমকে দিতে পারে বিশ্ব অর্থনীতিকে
লেখক: মো: নুরুল আমিন, পর্যটন বিশেষজ্ঞ।
Leave a Reply